eng
competition

Text Practice Mode

সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড - দুর্ঘটনা না নাশকতা, খুঁজে বের করতে হবে

created Dec 27th 2024, 06:06 by Oshim Kumar Sarker


3


Rating

422 words
4 completed
00:00
গত বুধবার রাতে সচিবালয়ে আগুন লাগার ঘটনায় সরকার স্বরাষ্ট্রসচিবের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। অগ্নিকাণ্ডের উৎস কারণ উদ্‌ঘাটন এবং এর পেছনে কারও ব্যক্তিগত বা পেশাগত দায়দায়িত্ব আছে কি না, তা খুঁজে বের করাই হবে কমিটির কাজ।
 
বুধবার দিবাগত রাত ১টা ৫০ মিনিটে সচিবালয়ের নম্বর ভবনে আগুন লাগে। ওই ভবনে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, ডাক টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দপ্তর আছে। আগুনে ছয়, সাত আটতলা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগুন নেভাতে গিয়ে সোহানুর জামান নামের এক অগ্নিনির্বাপণকর্মী মারা গেছেন।  
 
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, ‘তদন্ত করে জানা যাবে, এই অগ্নিকাণ্ডের পেছনে কোনো নাশকতার ঘটনা আছে কি না।’ অন্যদিকে স্থানীয় সরকার, যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ফেসবুকে এক বার্তায় লিখেছেন, সরকারকে অকার্যকর প্রমাণ করতেই এই আগুন লাগানো হয়েছে। যারাই আগুন লাগানোর ঘটনায় জড়িত থাকুক না কেন, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।
 
প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে ধরনের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড কেন ঘটল, এটি নিছক দুর্ঘটনা না নাশকতা, সেই রহস্য উদ্‌ঘাটন করা জরুরি। কয়েক বছর আগেও সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল।
 
প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সচিবালয়ে ঢোকার ফটক পাঁচটি। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢোকার ফটক আছে মাত্র দুটি। কিন্তু ওই দুই ফটক দিয়েও ফায়ার সার্ভিসের বড় গাড়ি ঢুকতে সমস্যা হয়েছে। সচিবালয়ের নম্বর ফটক দিয়ে ঢুকতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়ি ভেঙে গেছে।
 
দ্বিতীয়ত, সচিবালয়ের কয়েকটি দপ্তরে কাঠ দিয়ে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করা হয়েছে, যা থেকে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। সৌন্দর্যবর্ধন মানেই সরকারের কোষাগার থেকে অর্থ ব্যয়। প্রশ্ন হচ্ছে, সৌন্দর্যবর্ধনের নামে সচিবালয়কে কেন ‘অগ্নিখামারে’ পরিণত করা হয়েছে?
 
ফায়ার সার্ভিসের একাধিক সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, আগুন নেভাতে গিয়ে তাঁদের পদে পদে প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হয়েছে। আগুন নেভানোর জন্য ফায়ার সার্ভিসের দুটি টার্নটেবল লেডার (টিটিএল) ভেতরে ঢুকতে পেরেছে। যদি আরও বেশি টিটিএল ঢুকতে পারত, তাহলে আরও আগে আগুন নেভানো সম্ভব হতো।  
 
অগ্নিকাণ্ডটি নিছক দুর্ঘটনা না নাশকতা, সেটা খুঁজে বের করার দায়িত্ব সরকারের। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা যে ইঙ্গিত করেছেন, সেটাও বিবেচনায় আনতে হবে। অগ্নিনির্বাপণ দলের সহায়তাকারী নৌবাহিনীর একজন কর্মকর্তাও বলেছেন, এই ঘটনা পরিকল্পিতভাবে কেউ ঘটিয়ে থাকতে পারেন। সচিবালয়ে যখন ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটল, তার আগে থেকে জনপ্রশাসনে অস্থিরতা চলে আসছিল বিভিন্ন ক্যাডারের মধ্যকার দ্বন্দ্বে। বুধবার রাতের অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে তার কোনো যোগসূত্র আছে কি না, তা–ও খতিয়ে দেখা দরকার।
 
সড়ক পরিবহন মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল হক জানিয়েছেন, একটি কমিটি গঠন করা হবে। তবে বেশি জরুরি ভবিষ্যতে যাতে রকম দুর্ঘটনা না ঘটে, সেটা নিশ্চিত করা।  
 
সচিবালয় দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এর নিরাপত্তা নিয়ে সরকার উদাসীন থাকলে তা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। ভবিষ্যতে দুর্ঘটনা রোধ করতেই এর কারণ খুঁজে বের করা এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া অতি আবশ্যক বলে মনে করি।

saving score / loading statistics ...