Text Practice Mode
পদ্মা নদীর মাঝি উপন্যাস
created Sep 13th 2019, 06:55 by Sujan Devnath
3
294 words
20 completed
4.5
Rating visible after 3 or more votes
00:00
নৌকা চলে পদ্মায়। পদ্মা তো কখনো শুকায় না। কবে এ নদীর সৃষ্টি হইয়াছে কে জানে। সমুদ্রগামী জলপ্রবাহের আজও মুহূর্তের বিরাম নাই। গতিশীল জলতলে পদ্মার মাটির বুক কেহ কোনো দিন দ্যাখে নাই, চিরকাল গোপন হইয়া আছে।’ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯৩৬ সালে প্রকাশিত হওয়া ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ উপন্যাসে এ কথাগুলো লিখেছেন।
উপন্যাসে বিধৃত পদ্মার রূপ এখন আর বর্তমান নেই। এখনকার পদ্মা নদীর ওপর আন্তরাষ্ট্রীয় দখলদারিত্ব রয়েছে। প্রাকৃতিকভাবে প্রবহমানতার মধ্যে মনুষ্যসৃষ্ট ছেদ নদীর প্রকৃত রূপ নষ্ট করে দিয়েছে। নদীর প্রাণ জল। সেই জল নিয়ে আছে ভাগাভাগি। ভারত উজানের দেশ হওয়ার কারণে পদ্মার ওপর ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে পদ্মার যে বুক কেউ কোনো দিন দেখেনি বলে লেখক উল্লেখ করেছেন, সেই বুকই এখন দৃশ্যমান হয়ে থাকে। জলহীন পদ্মার বুকে বছরের অর্ধেক সময়জুড়ে শুধু বালু আর বালু। পদ্মার যৌবন এখন রুপালি চরে ঢাকা।
আশ্বিন-কার্তিক মাসে আগে পানি কমে যেত। সেই পানি কমে যাওয়ার পরও শুষ্ক মৌসুমে জলরাশির প্রস্থরূপ ছিল তিন মাইল। লেখকের ভাষায়—‘তখন আশ্বিন মাস, সেখানে পদ্মার এ তীর ও তীরের ব্যবধান তিন মাইলের কম নয়।’ শুষ্ক মৌসুমে সেই জলরাশি এখন আর নেই। সভ্যতা-মানবতা-মানবিকতা সব কিছুই আজ তুচ্ছ, অতি গৌণ। ভারতের অংশে জল আছে। তারা জল আটকে রেখেছে। ভারতের সঙ্গে পদ্মার জল নিয়ে বাংলাদেশের একটি চুক্তি থাকলেও তা কাগুজে। নদীখেকো জাতিতে পরিণত হচ্ছে অনেকেই। সর্বগ্রাসী মানুষ যখন থেকে নদীর বুকে গ্রাস বসিয়েছে, তখন থেকে প্রকৃতিও তার চরিত্র বদলিয়েছে। ফলে বাংলাদেশ অংশের পদ্মা অববাহিকা মরুকরণের পথে হাঁটছে।
পদ্মা নদীর সমাজচিত্র এখন ইতিহাসের অংশ। সময়-সমাজই শিল্প-সাহিত্যের প্রতিচ্ছবি। আমরা বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন চর্যাপদের বহুকৌণিক বিশ্লেষণ করে থাকি। সমাজচিত্র তার মধ্যে অন্যতম বিশ্লেষণ। চর্যাপদ একই সঙ্গে ধর্মীয় সংস্কৃতির অংশ, একই সঙ্গে সমাজচিত্রও বটে। ফলে প্রাচীন ভাষা-দর্শন-সমাজ সব কিছুর জন্যই আমরা একবার ফিরে তাকাই চর্যাপদের দিকে। শ্রীকৃষ্ণকীর্তনসহ মধ্যযুগের সাহিত্যে আমরা অতীতের সন্ধান করে থাকি। পদ্মা নদীর মাঝিতেও আমরা যে জীবন পাই তাও আমাদের ইতিহাস পাঠের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়েছে।
উপন্যাসে বিধৃত পদ্মার রূপ এখন আর বর্তমান নেই। এখনকার পদ্মা নদীর ওপর আন্তরাষ্ট্রীয় দখলদারিত্ব রয়েছে। প্রাকৃতিকভাবে প্রবহমানতার মধ্যে মনুষ্যসৃষ্ট ছেদ নদীর প্রকৃত রূপ নষ্ট করে দিয়েছে। নদীর প্রাণ জল। সেই জল নিয়ে আছে ভাগাভাগি। ভারত উজানের দেশ হওয়ার কারণে পদ্মার ওপর ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে পদ্মার যে বুক কেউ কোনো দিন দেখেনি বলে লেখক উল্লেখ করেছেন, সেই বুকই এখন দৃশ্যমান হয়ে থাকে। জলহীন পদ্মার বুকে বছরের অর্ধেক সময়জুড়ে শুধু বালু আর বালু। পদ্মার যৌবন এখন রুপালি চরে ঢাকা।
আশ্বিন-কার্তিক মাসে আগে পানি কমে যেত। সেই পানি কমে যাওয়ার পরও শুষ্ক মৌসুমে জলরাশির প্রস্থরূপ ছিল তিন মাইল। লেখকের ভাষায়—‘তখন আশ্বিন মাস, সেখানে পদ্মার এ তীর ও তীরের ব্যবধান তিন মাইলের কম নয়।’ শুষ্ক মৌসুমে সেই জলরাশি এখন আর নেই। সভ্যতা-মানবতা-মানবিকতা সব কিছুই আজ তুচ্ছ, অতি গৌণ। ভারতের অংশে জল আছে। তারা জল আটকে রেখেছে। ভারতের সঙ্গে পদ্মার জল নিয়ে বাংলাদেশের একটি চুক্তি থাকলেও তা কাগুজে। নদীখেকো জাতিতে পরিণত হচ্ছে অনেকেই। সর্বগ্রাসী মানুষ যখন থেকে নদীর বুকে গ্রাস বসিয়েছে, তখন থেকে প্রকৃতিও তার চরিত্র বদলিয়েছে। ফলে বাংলাদেশ অংশের পদ্মা অববাহিকা মরুকরণের পথে হাঁটছে।
পদ্মা নদীর সমাজচিত্র এখন ইতিহাসের অংশ। সময়-সমাজই শিল্প-সাহিত্যের প্রতিচ্ছবি। আমরা বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন চর্যাপদের বহুকৌণিক বিশ্লেষণ করে থাকি। সমাজচিত্র তার মধ্যে অন্যতম বিশ্লেষণ। চর্যাপদ একই সঙ্গে ধর্মীয় সংস্কৃতির অংশ, একই সঙ্গে সমাজচিত্রও বটে। ফলে প্রাচীন ভাষা-দর্শন-সমাজ সব কিছুর জন্যই আমরা একবার ফিরে তাকাই চর্যাপদের দিকে। শ্রীকৃষ্ণকীর্তনসহ মধ্যযুগের সাহিত্যে আমরা অতীতের সন্ধান করে থাকি। পদ্মা নদীর মাঝিতেও আমরা যে জীবন পাই তাও আমাদের ইতিহাস পাঠের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়েছে।
saving score / loading statistics ...